Friday, January 20, 2017

ছেলে সন্তান না হয়ে কন্যা সন্তান জন্ম হওয়ায় নিজ সন্তানকে গলা টিপে হত্যা করেছে পাষণ্ড মা!

আনোয়ার হোসেন রানা,স্টাফ রিপোর্টার:

ছেলে সন্তান না হয়ে কন্যা সন্তান জন্ম হওয়ায়  কন্যা সন্তানকে গলা টিপে হত্যা করেছে পাষণ্ড মা । সন্তান হত্যা অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাতে পাশন্ড মা অঞ্জনা দাসকে (৩০) আটক করেছে সাভার থানার পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে সাভারের আনন্দপুর গ্রামে। বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশ নবজাতকের মরদেহ ও মাকে আটকের করার পর চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে এলাকায়।

জানা যায়, গৌরাঙ্গ দাস-স্ত্রী অঞ্জনা দাস দম্পতি চার সন্তানের জননী। আগের তিনটি সন্তান কন্যা হওয়ায় এবার ছেলে সন্তানের ব্যাপারে আশাবাদী ছিলেন গৌরাঙ্গ-অঞ্জনা দম্পতি। তবে ছেলে সন্তান না হওয়ায় বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারেনি গৌরাঙ্গ। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অসন্তোষের এ ঘটনায় স্ত্রীর উপর স্বামীর নির্যাতন বেড়ে যায়। এ অবস্থায় স্বামীর অসন্তোষ থেকে বাঁচতে  বৃহস্পতিবার  লোক জনের আড়ালে নিজের সন্তানকে গলা টিপে হত্যার পথ বেঁচে নিয়েছেন ওই মা-এমনটাই জানিয়েছে পুলিশ।

গৌরাঙ্গ-অঞ্জনার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ১৫ বছর আগে মানিকগঞ্জে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় এ দম্পতি। বিয়ের দুই বছর পরেই পূর্ণিমা নামের একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয় গৌরাঙ্গ-অঞ্জনার সংসারে। এর আট বছর পর ছেলে সন্তানের আশায় আবার সন্তান ধারণ করে অঞ্জনা। তবে শিপন্না নামের আর এক কন্যা জন্ম নেয় দ্বিতীয়বার। ছেলে সন্তানের আশায় ওই বছরই আবার সন্তান ধারণ করলে তৃতীয় বারের মত মেয়ে সন্তানের মা হন অঞ্জনা। বিষয়টি নিয়ে স্বামী গৌরাঙ্গের সঙ্গে প্রায় ঝগড়া বিবাদ দেখা দিত অঞ্জনার। কিন্তু ছেলে সন্তান পাওয়ার আশায় চতুর্থ বারের গর্ভধারণ করে অঞ্জনা।শনিবার অঞ্জনার কোলে আসে আবারও একটি মেয়ে শিশু।

শফিকুল নামের এক প্রতিবেশী বলেন, গৌরাঙ্গ পেশায় মুচি। গৌরাঙ্গ-অঞ্জনার সংসারে ঝগড়া দেখেছি অনেকবার। বাচ্চাটি জন্ম নেয়ার পর আরও বেশি ঝগড়া হতো তাদের মধ্যে। তবে বাচ্চাটিকে এভাবে হত্যা করা হবে সেটি ভাবতেও পারিনি। অঞ্জনার বোন সান্তনা বলেন, চতুর্থ বার কন্যাটি জন্ম নেয়ার পর জামাইবাবু (দুলাভাই) রাগ করে বাড়ি ছেড়ে চলে যান। বৃহস্পতিবার জামাই বাবু ফিরে আসলে তাদের মধ্যে আবার ঝগড়া হয়। ছেলে সন্তানের ব্যাপারে তাদের দুই জনেরই খুব ইচ্ছা ছিল।

সাভার মডেল থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুমন মিয়া জানান, নবজাতকটিকে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে। স্বাভাবিক মৃত্যু নয় এটা নিশ্চিত। তার মাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এ ব্যাপারে বাবা-মা দুজনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


SHARE THIS

Author:

0 comments: