Friday, September 30, 2016

ভারত-পাকিস্তানের বাক যুদ্ধ শেষ পর্যন্ত সাময়িক যুদ্ধেই রুপ নিলো!.

বিশ্ব তাকিয়ে ভারত পাকিস্তানের দিকে। দু,দেশের বাক যুদ্ধ শেষ পর্যন্ত সাময়িক যুদ্ধেই রুপ নিলো!ভারতের দাবি বৃহস্পতিবার রাতে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে প্রবেশ করে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তু হামলা চালিয়ে ৩০ থেকে ৪০ জন পাকিস্তানি সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে তাদের সেনাবাহিনী। অন্যদিকে পাকিস্তান এ দাবি প্রত্যাখান করে বলেছে তাদের সেনাবাহিনী ৮ ভারতীয় সেনাকে হত্যাসহ একজনকে আটক করেছে।
পাকিস্তানের ডন পত্রিকার এক খবরে বলা হয়েছে বৃহস্পতিবার রাতে ভারতের ‘আক্রমণ রুখতে’ গিয়ে দুজন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছে। তবে পাকিস্তান তাদের ভূখণ্ডে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে প্রবেশ করতে দেয়নি।
ডন পত্রিকার খবরে আরো বলা হয়, নিয়ন্ত্রণরেখায় ওই হামলা ঘটনার সময় কমপক্ষে আট জন ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছে। পাকিস্তানি বাহিনীর গুলির ভয়ে তাঁদের মৃতদেহও উদ্ধারের কোনো উদ্যোগ নেয়নি ভারতীয় বাহিনী। মৃতদেহগুলো এখনো ঘটনাস্থলে পড়ে আছে। এ ছাড়া এক ভারতীয় সেনাকেও আটক করা হয়েছে বলে দাবি করেছে পাকিস্তান।
পাকিস্তানের এ দাবি প্রত্যাখান করে ভারতীয় সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে পিটিআইয়ের খবরে বলা হয়েছে, পাকিস্তানি গণমাধ্যমের একটি অংশ ভারতীয় সেনা নিহত ও আটকের যে খবর দিচ্ছে, তা পুরোপুরি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। বরং পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে অভিযান চালিয়ে ৩০ থেকে ৪০ জন পাকিস্তানী সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। তবে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর বরাত দিয়ে রয়টার্স বলছে, ‘৩৭ রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের এক সদস্য অস্ত্রসহ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে আটকের খবর নিশ্চিত।’
এদিকে ভারতীয় হামলার জবাব কিভাবে দিবে পাকিস্তান!এই ইস্যুতে সবার দৃষ্টি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দিকে।তবে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক আয়েশা সিদ্দিকা বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক স্বাক্ষাতকারে জানান, “এখনো কোন কিছুই নিশ্চিত নয়। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী দাবি করছে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর গোলাগুলি হয়েছিল। ভারতীয় সেনাবাহিনীর ডাইরেক্টর অব মিলিটারি অপারেশন্স কিছু দাবি করেছেন। কিন্তু সেখানকার সাংবাদিকরাসহ কেউই এ হামলার কিছু নিশ্চিত করতে পারেন নি”।
“সুতরাং আমরা শুধু দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যই জানতে পারছি। কিন্তু যেটা আমরা সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পারি, তা হলো, উরিতে আক্রমণের একটা সমাপ্তি টানা ভারতের জন্য দরকার ছিল। এখন আমাদের দেখতে হবে এটাই সেই সমাপ্তি কিনা। এখন আমরা ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের এক নতুন অধ্যায়ের জন্য অপেক্ষা করবো কিনা”।
আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, ভারতের এই সার্জিক্যাল হামলার দাবি আসলে সেদেশের জনগণকে এবং মিডিয়াকে দেখাতে চাইছে যে উরি হামলার একটা “শক্ত জবাব” তারা দিয়েছে? “কারণ দুই তরফেই বাকযুদ্ধটা এমন তীব্র পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, শুধু আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে নয়, নিজ নিজ দেশের জনগণকে বুঝ দেয়ার জন্য হলেও তাদের লোক দেখানো কিছু একটা করে দেখাতে হবে।”
তিনি বলেন, ভারতের দাবি সেনাবাহিনীর সাথে গোলা-গুলিতে দুইজন পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয়েছে। এই ঘটনায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ শুক্রবার মন্ত্রিসভার জরুরী বৈঠক ডেকেছেন। আমি বিশ্বাস করি পাকিস্তান এই ঘটনায় কোন পাল্টা আক্রমন চালাবে না। কারণ হামলার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান বলছে এটা আসলে কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর গোলাগুলি, কোন সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নয়। এ থেকে আমরা যেটা বুঝি, তা হলো, সেরকম গুরুতর কিছু ঘটেনি, যেটার জন্য পাকিস্তানকে পাল্টা সামরিক হামলা চালাতে হবে।
উরি হামলায় ১৮ জন ভারতীয় সেনা নিহত হওয়ার পর ভারত গত দৃই সপ্তাহ ধরে কূটনৈতিকভাবে পাকিস্তানকে কোনঠাসা করার চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে তারা ইসলামাবাদে সার্ক সম্মেলন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান এবং ভুটান।
এ বিষয়ে আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, এর পাল্টা জবাবে পাকিস্তান এখন চীন এবং রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাইছে। ভারত পাকিস্তানের এই দ্বন্দ্ব এখন আর দক্ষিণ এশিয়ায় সীমাবদ্ধ থাকবে না।আরও বৃহত্তর আন্তর্জাতিক পরিসরেও এ নিয়ে একটা কূটনৈতিক মেরুকরণ দেখা দিবে।
ভারতের সেনাবাহিনীর ডিরেক্টর জেনারেল অব মিলিটারি অপারেশন (ডিজিএমও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল রণবীর সিং বৃহস্পতিবার বলেন, বুধবার মধ্যরাতে শুরু হওয়া এ হামলা শেষ হয় বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে চারটায়। তিনি বলেন, পাকিস্তানের ডিজিএমওকে এ হামলার বিষয়টি জানিয়েছিলেন।
তবে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ভারতের এ দাবিকে ‘একেবারে ভিত্তিহীন ও মিথ্যা বলে আখ্যায়িত করেন। সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিম বাজওয়া বলেন, দুই ডিজিএমওর মধ্যে দুই দেশের সীমান্তে গুলিবিনিময়ের বিষয়ে কথা হয়েছে। বিদ্যমান আইনের পরিপ্রেক্ষিতেই এ ধরনের যোগাযোগ হয়েছে। আসিম বাজওয়া পাকিস্তানের টেলিভিশন চ্যানেল জিয়ো টিভিকে বলেন, ‘ভারতের দাবি আমরা প্রত্যাখ্যান করি। আমাদের ভূখণ্ডে কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি।


SHARE THIS

Author:

0 comments: