আমাদের দেশে ভারতীয় সিরিয়ালের প্রচুর দর্শক থাকলেও কলকাতার মানুষেরা কলকাতায় নির্মিত সিরিয়াল দেখে না। সেখানকার নারীরা জানে না কোন টাইমে কোন সিরিয়াল হয়, পাখি, কিরণমালা নিয়ে নেই কোনো মাতামাতিও- এমনটাই জানা গেছে বাংলাদেশের একটি বেসরকারি টেলিভিশনের অনুসন্ধানে।
এই অনুসন্ধানের জন্য টেলিভিশনটি সম্প্রতি কলকাতায় চষে বেড়ায়।
যমুনা টেলিভিশন কলকাতায় প্রথমে জনপ্রিয় সিরিয়াল ‘ইচ্ছেনদী’র শুটিং স্পটে হাজির হয়। এই সিরিয়ালের গল্প পারিবারিক দ্বন্দ্ব ও ত্রিভূজ প্রেম নিয়ে। ইতোমধ্যে ৫৫০ পর্ব প্রচারিত হয়ে গেছে। এর নায়ক বিক্রম চ্যাটার্জি যিনি নাটকে অনুরাগ ব্যানার্জি হিসেবে পরিচিত। তিনি কথা বলেন ক্যামেরার সামনে।
নাটকের চরিত্ররা বাস্তবে কেমন? এই প্রশ্নের জবাবে ইচ্ছেনদীর অভিনেত্রী লাবণী বলেন, ভালো ভালো অভিনয় করছেন বাস্তবে তিনি মহা বদমাশ লোক আবার সিরিয়ালে ভিলেন করছেন কিন্তু তার মতো ভালো লোকই কম আছে। দুই বাংলার প্রসঙ্গে প্রশ্ন এলে এই অভিনেত্রী বাংলাকে পৃথক করতে রাজি নন। তিনি বললেন, ‘আমি দুই বাংলা বলতে কিচ্ছু বুঝি না, আমার কাছে বাংলা বলতে কলকাতা আর বাংলাদেশ একই দেশ।
‘
কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। কলকাতায় বসে বাংলাদেশের কোনো চ্যানেলের দেখা মিলল না। বাংলাদেশে ২৩ টি চ্যানেল থাকলেও সেগুলোর কোনো অস্তিত্ব কলকাতাতে নেই। আবার আমাদের দেশে সেই ২৩ টি চ্যানেলের চেয়েও বেশি দেখা হয় কলকাতার স্টার জলসা ও জি বাংলা।
কলকাতার দাসানি স্টুডিও ৫ নম্বর ফ্লোরে যায় ওই যমুনার টিম- শুটিং চলছিল ‘চোখের তারা তুই’ ও ৪ নম্বর ফ্লোরে স্টার জলসার ‘ইস্টিকুটুম’ এর শুটিং চলছিল। স্টুডিওতে কথা বলে জানা যায় সেখানে ২৪ ঘণ্টাই শুটিং হচ্ছে। কোনো বিরতি নেই। কোনো ফ্লোর ভাড়ার জন্য বহু আগে থেকে বুকিং দেয়া হয়।
শ্রী ভারত লক্ষ্মী পিকচার্স স্টুডিওতে যায় যমুনা। সেখানে ইন্দ্রানি হালদার অভিনীত ‘গোয়েন্দা গিন্নি’ শুটিং চলছে। টেলিভিশন ক্যামেরার সামনে তিনি বাংলাদেশের কাউকে চেনেন কি না? এই প্রশ্নের উত্তরে একজনেরও নাম বলতে পারেন নি।
পাখি ও কিরণমালাও কি কলকাতার মানুষের মনে দাগ কাটে? যমুনা টেলিভশন কলকাতার ঘরে ঘরে বিষয়টি জানতে ঢুঁ মারে। কিন্তু হতাশজনক কথা যে, কলকাতার কিশোর-তরুণীরা কলকাতার সিরিয়াল দেখে না। কেউ কেউ টিভি দেখলেও এনিমেটেড ফিল্ম দেখে, অশ্বীনি দত্ত রোডের এক বাসার চার কিশোরী-তরুণী এমনটাই জানাল।
কিরণমালা ও পাখি কেমন জনপ্রিয় জানতে চাইলে পরিবারের অন্যান্য নারী সদস্যরা ভালো করে নামটাও মনে করতে পারলেন না, কোন টাইমে হয় তাও জানেন না। কী দেখেন তারা? কলকাতার অধিকাংশ শিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত নারীরা রিয়েলিটি শো’র ভক্ত।
0 comments: